শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘে কাশ্মীর ইস্যু তোলায় পাকিস্তানের প্রতি ভারতের কঠোর প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৪২ অপরাহ্ন, ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি : সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কাশ্মীর নিয়ে কথা বলায় পাকিস্তানের সমালোচনা করেছে ভারত। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানকে মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আহ্বানও জানায় ভারত।

পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কাশ্মীর নিয়ে কথা বলেন। তিনি জম্মু-কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করে বলেন, ভারতের উচিত পাকিস্তানের প্রস্তাবকে গ্রহণ করা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের মহিলা কূটনৈতিক পেটাল গাহলট পাকিস্তানের কড়া ভাষায় নিন্দা করেন। তিনি পাকিস্তানকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করতে, জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো খালি করতে এবং পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর মানবাধিকার বিরোধী কার্যক্রম বন্ধ করতে বলেন। 

এর আগেও বহুবার ভারত পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নিজের বলিষ্ঠ আওয়াজ তুলেছিল।

ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালানোর জন্য পাকিস্তানের কঠোর সমালোচনা করার পর পেটাল বলেন, নিজেদের অপরাধ ঢাকতেই বারবার অন্যদের দোষী করার তাগিদে পাকিস্তান এমন ধরনের কাজ করে, যা এখন কারোরই অজানা নয়।

তিনি ভারতের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের অঞ্চলগুলো ভারতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতের এসব অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের নাক গলানোর কোন ধরনের অধিকার নেই।

পেটাল আরো বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উপর আঙ্গুল তোলার আগে পাকিস্তানের উচিত নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমাধান করা। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম দেশ হচ্ছে পাকিস্তান। সংখ্যালঘু ও মহিলাদের উপর হামলার জন্য প্রায়শই পত্রপত্রিকায় পাকিস্তানের উল্লেখ থাকে। চলতি বছরের আগস্ট মাসেই পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের জরানওয়ালায় সংখ্যালঘু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপর বর্বরতা চালানো হয়। এ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ১৯ টি গির্জা ধ্বংস করা হয় এবং ৮৯ টি খ্রিস্টান বাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়।

পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীরা বিশেষ করে হিন্দু, শিখ এবং খ্রিস্টানদের অবস্থা শোচনীয়। পাকিস্তানের নিজস্ব মানবাধিকার কমিশনের প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতি বছর পাকিস্তানে প্রায় এক হাজারেরও অধিক সংখ্যালঘু নারী অপহরণ, ধর্ষণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণের শিকার হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক সন্ত্রাসী নির্বিঘ্নে বসবাস করছে পাকিস্তানে। 

১৫ বছর ধরে মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পাকিস্তান। এ বিষয়ে অতিশীঘ্রই পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান পেটাল। 

বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে কাকার বলেন, পাকিস্তান তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। কাশ্মীর হলো ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার শান্তির চাবিকাঠি।

তবে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের বিষয়ে ভারতের অবস্থান অবিচল। এ অঞ্চলগুলো ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে। ভারতও পাকিস্তানের সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, কিন্তু এটা তখনই সম্ভব যখন পাকিস্তান তার সন্ত্রাসী কার্যক্রমের উপর থেকে লাগাম টানবে

পাকিস্তান এর আগেও বহুবার জম্মু-কাশ্মীরের ইস্যু উত্থাপনের জন্য ইউএনজিএ এর মতো বহুপাক্ষিক সংস্থাকে ব্যবহার করেছে।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার জন্য ভারত সংবিধানের ৩৭০ নং অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে করে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক আরো উত্তপ্ত হয়।

এসকে/ এএম/ 

পাকিস্তান ভারত জাতিসংঘ জম্মু-কাশ্মীর

খবরটি শেয়ার করুন